ত্বকে অ্যালার্জি ? অ্যালার্জি সহ ত্বকের যত্ন: কার্যকরী টিপস ও পরামর্শ

Best Beauty Care

অ্যালার্জি সহ ত্বকের যত্ন

অ্যালার্জি সহ ত্বকের যত্নে বিশেষজ্ঞ হিসাবে – সংবেদনশীল ত্বক পরিচালনা করা সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াগুলির একটি মাইনফিল্ডের মধ্য দিয়ে টিপটোয়িংয়ের মতো অনুভব করতে পারে। আপনি একটি নতুন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার কারণে আপনার ত্বকে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে – অ্যালার্জির সাথে ত্বকের যত্নের সঠিক পদ্ধতির সাথে, আপনি নাটক ছাড়াই আপনার ত্বককে প্যাম্পার করতে পারেন।

হাইপোঅ্যালার্জেনিক পণ্য বেছে নেওয়া থেকে শুরু করে উপাদানের লেবেল বোঝা পর্যন্ত, অ্যালার্জি সহ ত্বকের যত্নে দক্ষতা অর্জন করা আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গোয়েন্দা হয়ে ওঠার মতো। আসুন কোমল, কার্যকর ত্বকের যত্নের জগতে ডুব দেই এবং সেই অ্যালার্জিজনিত সমস্যাগুলিকে একটি মসৃণ-সেলিং স্কিনকেয়ার রুটিনে রূপান্তরিত করি।

সৌন্দর্য চর্চা বা রূপচর্চা সবারই ভালো লাগে। আর তাই তো, বাজারে নামীদামী এবং নানান ব্র্যান্ডের অসংখ্য বিউটি এবং স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের ছড়াছড়ি। তবে এখানে একটা কিন্তু আছে। আর সেটা হচ্ছে অ্যালার্জি। আমাদের ত্বক অনেক সংবেদনশীল। বিউটি এবং স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলোতে এমন অনেক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় যেগুলো আমাদের ত্বকের সঙ্গে মানানসই হতে পারে না। ফলে ত্বকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির দেখা মেলে। আর তা অ্যালার্জিতে রূপান্তরিত হতেও বেশি সময় নেয় না। তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

কারণ ও লক্ষণ:  

এমনও হতে পারে যে, প্রোডাক্ট ব্যবহার করা মাত্রই আপনার ত্বকে প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার এমনও হতে পারে যে, বছরখানেক কিংবা তারও বেশি সময় ব্যবহার করার পর প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহারে ত্বকে সাধারণত দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একটি হচ্ছে ইরিট্যান্ট কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস; যা প্রকৃতপক্ষে ত্বকের ক্ষতি করে। এতে আপনার ত্বক জ্বালাপোড়া করবে, চুলকাবে, ব্যথা করবে, কামড়াবে অথবা যেই জায়গায় প্রোডাক্টটি ব্যবহার করেছেন সেখানে লালচে ভাব ফিরে আসবে। এমনকি সেখানে ফুসকুড়ির দানা দেখা দিবে এবং পুঁজও বের হতে পারে যদি আপনি নখ দিয়ে খোঁচাখুঁচি করেন।

আর অন্যটি সরাসরি আপনার ইমিউন সিস্টেম বা প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত। এটিকে বলা হয় অ্যালার্জিক কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস। লক্ষণগুলোর মধ্যে লালচে ভাব, ফোলা ভাব, চুলকানি, এবং হাইভস বা আমবাত হতে পারে। আপনার ত্বক লাল হয়ে ক্ষতের মতো দেখাবে। এই ধরনের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া শরীরের যে কোনো স্থানেই হতে পারে। তবে বেশিরভাগ সময়ই এটি মুখ, ঠোঁট, নাক, চোখ, কান – সর্বোপরি মুখমণ্ডলেই দেখা দেয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই প্রতিক্রিয়ার জন্য সুগন্ধী এবং প্রিজারভেটিভ জাতীয় প্রোডাক্টকে দায়ী করা হয়। এমনকি গন্ধমুক্ত লেখা প্রোডাক্টেও কেমিক্যালের সুগন্ধ থাকতে পারে। হয়তো আপনার নাকে তা ধরা দেবে না; কিন্তু এটি আছে এবং এই কারণে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়।

যে প্রোডাক্টে জল থাকে সেটাতে প্রিজারভেটিভও থাকে। প্যারাবিনস, ইমিডাজলিডিনাইল ইউরিয়া, কোয়ার্টেনিয়াম – ১৫, ডিএমডিএম হাইড্যানটয়েন, ফেনোক্সিথেনল, মেথাক্লোরোআইসোথায়াজোলিনোন, এবং ফর্মালডিহাইডের ব্যবহার একদম সাধারণই বলা চলে। তবে এসব রাসায়নিক পদার্থই সরাসরি ত্বকের অ্যালার্জির সঙ্গে যুক্ত।

বিউটি প্রোডাক্ট বা ত্বকসংরক্ষণ পণ্যগুলিতে থাকা সাবান, ডিটারজেন্ট, অ্যান্টিপারস্পান্ট, আই মেকআপ, ময়েশ্চারাইজার, শ্যাম্পু, দীর্ঘস্থায়ী লিপ স্টেইন, নেইল পলিশ (যেগুলিতে ফর্মালডিহাইড থাকতে পারে), এবং ফিঙ্গারনেইল গ্ল যার মধ্যে মেটাক্রাইলেট থাকে। চুলের রঙ পরিবর্তন করার জন্য ব্যবহৃত হেয়ার ডাই এবং সেগুলির মধ্যে ফেনিলেনডাইমিন এবং অ্যামোনিয়াম পারসালফেট সহ অন্যান্য উপাদানের মধ্যে চুলের ক্ষতি এবং ত্বকের অ্যালার্জির সম্ভাবনা রয়েছে।

আলফা-হাইড্রক্সি এসিডের কারণে অনেকেরই ত্বকে লালচে ভাব, ফোলা ভাব, ফোসকা এবং চুলকানি দেখা দেয়। বিশেষত এসব পণ্যে যদি এএইচএ এর মাত্রা ১০% এর বেশি থাকে তাহলে তো কথায়ই নেই। রেটিনোল রিঙ্কেল ক্রিম এবং সিরামেও ইরিটেটিং কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস হয় অনেকের। আবার সানস্ক্রিন সেনসিটিভিটিও রয়েছে অনেকের। তাদের ক্ষেত্রে আবার যে কোনো সানস্ক্রিন প্রটেকশন বিউটি প্রোডাক্টও ডার্মাটাইটিসের প্রতিক্রিয়া বয়ে আনতে পারে।

প্রতিকার: 

প্রতিকারের সর্বপ্রথম এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারী বিউটি প্রোডাক্টের ব্যবহার বন্ধ করা। প্রাথমিক অবস্থায় সমস্যা সমাধানের জন্য এটাই যথেষ্ট পদক্ষেপ। হাইড্রোকর্টিসোনের তৈরির জন্য ত্বকের সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে; তাই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারে ত্বকের প্রতিক্রিয়া এড়ানো যায় যেভাবে –

  • প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সেই প্রোডাক্টের কেমিক্যালস আপনার ত্বকে ক্ষতি করার পূর্বেই তা ব্যবহার বন্ধ করুন। 
  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস এমনিতেই নিরাময় হয়ে যায়। তাই ব্যতিব্যস্ত না হয়ে প্রোডাক্টটির ব্যবহার বন্ধ করে অপেক্ষা করুন। 
  • মাইনর ইরিটেশনের ক্ষেত্রে বাসাতেই চিকিৎসা নেয়া যায়। তবে গুরুতর অবস্থা হবার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। 
  • স্ক্রাব বা সুগন্ধি সাবান অথবা লোশন, আক্রান্ত জায়গায় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এগুলো ক্ষতকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। 
  • যদি ক্ষতের জায়গা অতিরিক্ত শুষ্ক এবং ফাটল ধরে, তাহলে একদমই পাতলা করে পেট্রোলিয়াম জেলি বা জ্বালা কমানোর মলম ব্যবহার করতে পারেন। 
  • যদি ক্ষতের জায়গা চুলকানো থেকে নিজেকে বিরত রাখা অনেক কঠিন। তা সত্ত্বেও, বিরত রাখুন নিজেকে। 
  • এমন স্কিন কেয়ার বা বিউট প্রোডাক্ট খুঁজুন যেগুলোতে উপাদানের সংখ্যা সীমিত বা কম। এতে করে ত্বকে প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনাও অনেকখানি কমে যায়। 
  • প্যাচ টেস্ট করে নিন প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে। কনুইয়ের ভেতর দিকে অল্প একটু পরিমাণ বিউটি প্রোডাক্ট নিয়ে রেখে দিন ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টা। যদি লালচে ভাব, ফোলা, ফুসকুড়ি কিংবা চুলকানি অথবা জ্বালাপোড়া করে তাহলে প্রোডাক্টটি ব্যবহার করবেন না। 
  • সুগন্ধি সবসময় আপনার পোশাকে ব্যবহার করুন, ত্বকে দিবেন না। সুগন্ধি থেকে প্রতিক্রিয়া হ্রাস করার বেশ ভালো একটি পন্থা এটি। 
  • কেবলমাত্র প্রোডাক্টের লেবেলে লেখা “হাইপো অ্যালার্জিক”, “ডারমাটোলজিস্ট টেস্টেড”, “সেনসিটিভিটি টেস্টেড” বা “নন-ইরিটেটিং” দেখে প্রোডাক্টটির উপর ভরসা করার কোনো কারণ নেই। 

read more article:

MISTAKES IN KOREAN SKINCARE-কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে ভুল

SKIN TEAR- চামড়া ছিঁড়ে যাওয়া