১১ প্রকার জনপ্রিয় নাস্তার রেসিপি

Best Beauty Care

১১ প্রকার জনপ্রিয় নাস্তার রেসিপি

নাস্তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আমাদের সকালের শুরুতে শক্তি যোগায় এবং সারাদিনের কাজের জন্য প্রস্তুত করে। এছাড়াও, নাস্তা আমাদের সন্ধ্যার সময় ক্ষুধা মেটানোর একটি মজার উপায়। নাস্তার রেসিপি গুলো সাধারণত সহজ এবং দ্রুত তৈরি করা যায়, যা ব্যস্ত জীবনের জন্য উপযুক্ত। নাস্তা আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং মেটাবোলিজমকে ত্বরান্বিত করে। একটি ভালো নাস্তা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরের শক্তির চাহিদা পূরণ করে, এখানে আমরা কিছু প্রিয় এবং জনপ্রিয় নাস্তার রেসিপি নিয়ে আলোচনা করবো, যা আপনি সহজেই ঘরে তৈরি করতে পারেন। নাস্তা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে হালকা এবং সহজপাচ্য,পুষ্টিকর এবং ভারী, মিষ্টি অথবা ঝাল,  প্রতিটি রেসিপির সাথে থাকবে প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং প্রস্তুত প্রণালী।

নাস্তার রেসিপি
লুচি-আলু দমঃ

লুচি-আলু দম একটি জনপ্রিয় বাংলা খাবার যা বিশেষ করে ব্রেকফাস্ট বা ব্রাঞ্চে পরিবেশন করা হয়। লুচি হলো একটি গভীর ভাজা ফ্ল্যাটব্রেড এবং আলু দম হলো মসলা দিয়ে রান্না করা আলুর তরকারি। এই রেসিপিতে আমরা কীভাবে সহজে লুচি ও আলু দম তৈরি করা যায় তা শিখব।

লুচি-আলু দমঃ

উপকরণ: *লুচির জন্য:*  

  • 1 ময়দা: ২ কাপ  
  • 2 লবণ: ১ চিমটি  
  • 3 তেল: ২ টেবিল চামচ  
  • 4 পানি: পরিমাণমতো (ময়দা মাখার জন্য)  
  • 5 ভাজার জন্য তেল  

*আলু দমের জন্য:*  

  • 1 ছোট আলু: ৫০০ গ্রাম  
  • 2 পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ  
  • 3 টমেটো কুচি: ১/২ কাপ  
  • 4 আদা-রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ  
  • 5 হলুদ গুঁড়া: ১ চা চামচ  
  • 6 লাল মরিচ গুঁড়া: ১ চা চামচ  
  • 7 জিরা গুঁড়া: ১ চা চামচ  
  • 8 গরম মসলা গুঁড়া: ১/২ চা চামচ  
  • 9 ধনেপাতা কুচি: সাজানোর জন্য  
  • 10 লবণ: স্বাদমতো  
  • 11 তেল: ২ টেবিল চামচ 

*লুচি তৈরির প্রণালী:*  

1. একটি বড় পাত্রে ময়দা, লবণ এবং ২ টেবিল চামচ তেল মিশিয়ে নিন।  

2. পানি দিয়ে ময়দা মাখুন যতক্ষণ না একটি নরম, মসৃণ ময়দা তৈরি হয়।  

3. ময়দা মেখে ১৫-২০ মিনিট ঢেকে রাখুন।  

4. ময়দা থেকে ছোট ছোট লেচি করে বলের আকারে গড়ুন।  

5. বলগুলোকে বেলন দিয়ে ছোট, গোল আকারে বেলে নিন।  

6. একটি গভীর প্যানে তেল গরম করে লুচিগুলো ডিপ ফ্রাই করুন যতক্ষণ না সোনালী রঙ হয়।  

*আলু দম তৈরির প্রণালী:*  

1. আলুগুলো ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং সামান্য লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।  

2. একটি প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি ভাজুন যতক্ষণ না সোনালী হয়।  

3. এরপর আদা-রসুন বাটা, টমেটো কুচি, হলুদ গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া যোগ করে কষান।  

4. মশলাগুলো থেকে তেল ছেড়ে আসলে সেদ্ধ করা আলুগুলো মশলায় দিয়ে ভালোভাবে মেশান।  

5. প্রয়োজন মতো পানি দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন।  

6. গরম মসলা গুঁড়া এবং ধনেপাতা কুচি যোগ করে নামিয়ে নিন।  

**পরিবেশন:**  

গরম লুচি এবং মশলাদার আলু দম একসাথে পরিবেশন করুন। উপরে ধনেপাতা ছিটিয়ে আরও সুস্বাদু করে তুলতে পারেন।

পরোটা রেসিপি

**পরোটা** একটি জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার। এটি সাধারণত নাস্তা বা খাবারের সাথে পরিবেশন করা হয়। পরোটা হলো একটি মজাদার খাবার যা ময়দা ও তেলে ভেজে তৈরি করা হয়। এটি বাঙালি খাবারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং বিভিন্ন তরকারি বা চাটনির সাথে পরিবেশন করা হয়।

পরোটা

উপকরণ:

  • 1 ময়দা: ২ কাপ
  • 2 লবণ: ১ চা চামচ (স্বাদমতো)
  • 3 চিনি: ১/২ চা চামচ
  • 4 তেল বা ঘি: ২ টেবিল চামচ (ডো’র জন্য)
  • 5 পানি: প্রয়োজন মতো (ডো তৈরি করতে)
  • 6 তেল: ভাজার জন্য

প্রণালী:

1. **ময়দা মাখানো:**একটি বড় বাটিতে ময়দা, লবণ এবং চিনি নিন।এতে তেল বা ঘি যোগ করুন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।একটু একটু করে পানি যোগ করে মসৃণ এবং নরম ডো তৈরি করুন। ডোকে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট ঢেকে রেখে দিন।

2. **পরোটা তৈরি:**ডো থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে নিন। প্রতিটি লেচি নিয়ে গোলাকার করে বেলে নিন।বেলা পরোটাকে তেল দিয়ে ব্রাশ করুন এবং রোল করে মুড়িয়ে নিন। এরপর আবার গোলাকার করে বেলে নিন।

3. **ভাজা:**একটি তাওয়া বা ফ্রাই প্যানে তেল গরম করুন।বেলা পরোটাকে তাওয়ায় রেখে দুইপাশে তেল দিয়ে ভাজুন যতক্ষণ না সোনালি বাদামী রঙ আসে।

4. **পরিবেশন:**ভাজা পরোটা গরম গরম পরিবেশন করুন।পরোটার সাথে আলুর দম, চানা ডাল বা যে কোনো পছন্দের তরকারি পরিবেশন করতে পারেন।

ভাপা পিঠা

**ভাপা পিঠা** হল একটি জনপ্রিয় বাংলা মিষ্টি পিঠা যা সাধারণত শীতকালে তৈরি করা হয়। চালের গুঁড়া এবং নারকেল বা খেজুরের গুড়ের মিষ্টি পুর দিয়ে তৈরি এই পিঠাটি স্বাদে ভরপুর।

ভাপা পিঠা

উপকরণ:

**পিঠার বাইরের অংশের জন্য:**

  • ১ চালের গুঁড়া: ২ কাপ
  • ২ পানি: প্রয়োজনমতো
  • ৩ লবণ: স্বাদমতো

– **পুরের জন্য:**

  • ১ নারকেল কোরানো: ১ কাপ
  • ২ খেজুরের গুড়: ১ কাপ (চিনির পরিবর্তে)
  • ৩ এলাচ গুঁড়া: ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)

প্রণালী:

1. **চালের গুঁড়া প্রস্তুত:** চালের গুঁড়া একটি পাত্রে নিন এবং এতে লবণ মেশান।অল্প অল্প করে পানি দিয়ে মেশাতে থাকুন যতক্ষণ না একটি নরম মণ্ড তৈরি হয়।

2. **পুর তৈরি:**একটি প্যানে নারকেল কোরানো এবং খেজুরের গুড় মিশিয়ে চুলায় রাখুন।গুড় গলে গেলে ভালোভাবে মিশ্রিত করুন এবং মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে এলাচ গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।

3. **পিঠা তৈরি:**চালের গুঁড়ার মণ্ড থেকে ছোট ছোট গোলা তৈরি করুন। প্রতিটি গোলার মাঝখানে একটি গর্ত করে পুর ভরে দিন এবং গোলা চেপে বন্ধ করে দিন।পিঠা ভাপানোর জন্য একটি ভাপার পাত্র বা স্টিমার প্রস্তুত করুন। যদি স্টিমার না থাকে, তাহলে একটি বড় পাত্রে পানি দিয়ে, তার উপরে একটি ছিদ্রযুক্ত পাত্রে পিঠা রাখুন এবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।

4. **ভাপানো:** পিঠাগুলো স্টিমারে রাখুন এবং ১৫-২০ মিনিট ভাপিয়ে নিন। পিঠার বাইরের অংশ শক্ত হয়ে এলে বুঝতে হবে পিঠা সেদ্ধ হয়ে গেছে।

পরিবেশন: ভাপা পিঠা সাধারণত গরম গরম পরিবেশন করা হয়। এটি শীতের সকালে বা বিকেলে চা বা কফির সাথে খেতে খুবই মজাদার। আপনি চাইলে পিঠার সাথে সামান্য গুড় বা চিনি দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

সিঙ্গারা রেসিপি

**সিঙ্গারা** (বা সমোসা) বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি স্ন্যাক্স। এটি সাধারণত ময়দার আস্তরণের মধ্যে মশলাদার পুর দিয়ে তৈরি করা হয় এবং তেলে ভাজা হয়। সিঙ্গারার জনপ্রিয়তা ও স্বাদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

সিঙ্গারা রেসিপি

উপকরণ:

1. **আস্তরণের জন্য:**

  • ১ ময়দা: ২ কাপ
  • ২তেল: ২ টেবিল চামচ (ময়দায় মেশানোর জন্য)
  • ৩ লবণ: স্বাদমতো
  • ৪ পানি: প্রয়োজনমতো (ময়দা মাখার জন্য)

2. **পুরের জন্য:**

  • আলু: ৩-৪ টি (সেদ্ধ এবং চূর্ণ করা)
  • ২ মটরশুঁটি: ১/২ কাপ
  • ৩ পেঁয়াজ: ১ টি (কুঁচি করে কাটা)
  • ৪ আদা বাটা: ১ চা চামচ
  • ৫ রসুন বাটা: ১ চা চামচ
  • ৬ কাঁচা মরিচ: ২-৩ টি (মিহি করে কাটা)
  • ৭ ধনিয়া পাতা: ২ টেবিল চামচ (কাটা)
  • ৮ হলুদ গুঁড়া: ১/২ চা চামচ
  • ৯ জিরা গুঁড়া: ১ চা চামচ
  • ১০ ধনিয়া গুঁড়া: ১ চা চামচ
  • ১১ গরম মসলা গুঁড়া: ১/২ চা চামচ
  • ১২ তেল: ভাজার জন্য
  • ১৩ লবণ: স্বাদমতো

প্রণালী:

1. **আস্তরণ তৈরি:**ময়দা, লবণ এবং তেল একসাথে মিশিয়ে ময়ান তৈরি করুন, সামান্য পানি যোগ করে একটি মসৃণ ডো তৈরি করুন। ঢেকে ১৫-২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।

2. **পুর তৈরি:**একটি প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ, আদা, রসুন এবং কাঁচা মরিচ ভাজুন। মটরশুঁটি যোগ করে নরম হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।চূর্ণ করা আলু, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া এবং লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন, ধনিয়া পাতা এবং গরম মসলা গুঁড়া যোগ করুন। মিশ্রণটি কিছুক্ষণ রান্না করে নামিয়ে নিন।

3. **সিঙ্গারা গঠন:**ডো থেকে ছোট ছোট বল তৈরি করে বেলে নিন।বেলে নেওয়া ময়দার টুকরা থেকে একটি অর্ধবৃত্ত কেটে নিন।অর্ধবৃত্তের প্রান্তে পানি লাগিয়ে শঙ্কু আকৃতিতে ভাঁজ করুন।শঙ্কুর ভিতরে প্রস্তুত পুর ভর্তি করুন এবং প্রান্তগুলি চেপে বন্ধ করুন।

4. **ভাজা:**একটি কড়াইয়ে তেল গরম করুন। সিঙ্গারা গুলো সোনালী রঙ হওয়া পর্যন্ত তেলে ভাজুন।ভাজা হয়ে গেলে সিঙ্গারা গুলো তেল থেকে উঠিয়ে টিস্যু পেপারের উপর রাখুন, যাতে অতিরিক্ত তেল শোষিত হয়। সিঙ্গারা গরম গরম পরিবেশন করুন। 

দোসা রেসিপি

দোসা হলো দক্ষিণ ভারতীয় একটি জনপ্রিয় খাবার। এটি একটি পাতলা, খাস্তা প্যানকেক যা সাধারণত আলু ও মসলা মিশ্রিত পূরণসহ পরিবেশন করা হয়। নিচে দোসা তৈরির রেসিপি দেওয়া হলো:

দোসা রেসিপি

উপকরণ:**দোসার ব্যাটারের জন্য:**

  • ১  চাল: ২ কাপ
  • ২ মাসকলাই ডাল: ১ কাপ
  • ৩ মেথি দানা: ১ চা চামচ
  • ৪ লবণ: স্বাদমতো
  • ৫ পানি: প্রয়োজন অনুযায়ী

**মশলা পূরণের জন্য:**

  • ১ আলু: ৩-৪ টি (সেদ্ধ করে টুকরো করা)
  • ২ পেঁয়াজ: ১টি (কুচি করা)
  • ৩ কাঁচা মরিচ: ২-৩টি (কুচি করা)
  • ৪ হলুদ গুঁড়া: ১/২ চা চামচ
  • ৫ সরিষা দানা: ১ চা চামচ
  • ৬ কারি পাতা: কয়েকটি
  • ৭ লবণ: স্বাদমতো
  • ৮ তেল: ২ টেবিল চামচ

প্রস্তুতি:

**ব্যাটার তৈরি:**

1. চাল, মাসকলাই ডাল এবং মেথি দানা ভালোভাবে ধুয়ে ৬-৮ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।

2. ভিজানো চাল, ডাল ও মেথি দানা পিষে মসৃণ ব্যাটার তৈরি করুন।

3. ব্যাটারটি ৮-১০ ঘন্টা বা সারা রাত ফারমেন্ট হতে দিন।

4. ব্যাটারে লবণ মিশিয়ে নিন।

**মশলা পূরণ তৈরি:**

1. একটি প্যানে তেল গরম করুন। তাতে সরিষা দানা, কারি পাতা এবং কাঁচা মরিচ দিন।

2. পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা সোনালী রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।

3. সেদ্ধ আলু, হলুদ গুঁড়া, এবং লবণ মিশিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। 

4. ২-৩ মিনিট ভেজে নামিয়ে নিন।

**দোসা তৈরি:**

1. একটি ননস্টিক তাওয়া গরম করুন।

2. তাওয়ার উপর অল্প তেল ছড়িয়ে দিন।

3. তাওয়ার উপর এক চামচ ব্যাটার ঢেলে চামচের পেছন দিয়ে চক্রাকারে ছড়িয়ে পাতলা দোসা তৈরি করুন।

4. দোসার উপর একটু তেল ছড়িয়ে দিন এবং খাস্তা হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।

5. একটি পাশে মশলা পূরণ রেখে দোসা মুড়ে নামিয়ে নিন।

দোসা সাধারণত নারকেল চাটনি ও সাম্বার দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এটি ব্রেকফাস্ট বা স্ন্যাক্স হিসেবে উপভোগ করা যায়।

ইডলি তৈরির রেসিপি

ইডলি একটি জনপ্রিয় দক্ষিণ ভারতীয় খাবার, যা ভাত ও মসুর ডালের ব্যাটার থেকে তৈরি করা হয়। এটি হালকা ও সহজপাচ্য, যা সাধারণত নাশতা বা টিফিন হিসেবে খাওয়া হয়। নিচে ইডলি তৈরির প্রণালী দেওয়া হলো:

ইডলি তৈরির রেসিপি

উপকরণ:

  • ১ ভাত: ১ কাপ
  • ২ মসুর ডাল (উড়দ ডাল): ১/২ কাপ
  • ৩ লবণ: স্বাদমতো
  • ৪ পানি: প্রয়োজন মতো

প্রস্তুতি:

ভাত ও মসুর ডাল আলাদা আলাদা করে ধুয়ে পানি দিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ভাত ও ডাল ভিজিয়ে নেওয়ার পর, পানি ঝরিয়ে ব্লেন্ডারে একটি মসৃণ ব্যাটার তৈরি করুন। প্রয়োজনে সামান্য পানি মেশাতে পারেন। ব্যাটারটি বেশি ঘন বা পাতলা হওয়া উচিত নয়। ব্যাটারে লবণ মিশিয়ে দিন এবং ঢেকে একটি গরম জায়গায় ৮-১০ ঘণ্টা বা রাত্রি জুড়ে রেখে দিন, যাতে ব্যাটারটি ফারমেন্ট হয় এবং ফুলে ওঠে

ইডলি তৈরি:

ইডলি স্টিমারে বা একটি বড় পাত্রে পানি গরম করে নিন। ইডলি মোল্ডে তেল লাগিয়ে ব্যাটার ঢেলে দিন। ইডলি স্টিমারে মোল্ড রাখুন এবং ১০-১৫ মিনিট স্টিম করুন। ইডলি হয়ে গেলে একটি টুথপিক দিয়ে চেক করুন, যদি টুথপিক পরিষ্কার বের হয় তবে ইডলি তৈরি। স্টিম থেকে বের করে ইডলি গরম গরম সাম্বার, নারিকেলের চাটনি বা পছন্দের চাটনির সাথে পরিবেশন করুন।

পাও ভাজি রেসিপি

পাও ভাজি একটি জনপ্রিয় ভারতীয় স্ট্রিট ফুড যা মুম্বাই থেকে উদ্ভূত। এটি মশলাদার সবজির মিশ্রণ এবং নরম ব্রেড (পাও) দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এখানে পাও ভাজি তৈরির একটি সহজ রেসিপি দেওয়া হলো:

পাও ভাজি রেসিপি

উপকরণ:

1. **ভাজির জন্য:**

  • ১ আলু: ২টি, সেদ্ধ ও চূর্ণ করা
  • ২ মটরশুঁটি: ১/২ কাপ, সেদ্ধ
  • ৩ ফুলকপি: ১/২ কাপ, ছোট টুকরো করা
  • ৪ টমেটো: ২টি, কুচি করা
  • ৫ পেঁয়াজ: ১টি, কুচি করা
  • ৬ সবুজ ক্যাপসিকাম: ১টি, কুচি করা
  • ৭ আদা-রসুন পেস্ট: ১ টেবিল চামচ
  • ৮ হলুদ গুঁড়া: ১/২ চা চামচ
  • ৯ লাল মরিচ গুঁড়া: ১ চা চামচ
  • ১০ পাও ভাজি মশলা: ২ টেবিল চামচ
  • ১১ লবণ: স্বাদমতো
  • ১২ তেল: ২ টেবিল চামচ
  • ১৩ মাখন: ২ টেবিল চামচ
  • ১৪ ধনেপাতা: গার্নিশের জন্য, কুচি করা

2. **পাও (ব্রেড) এর জন্য:**

  •  পাও (ব্রেড): ৮-১০টি
  • মাখন: প্রয়োজনমতো

প্রণালী:

1. **ভাজি প্রস্তুতি:**একটি প্যানে তেল গরম করুন। পেঁয়াজ যোগ করুন এবং হালকা বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।আদা-রসুন পেস্ট যোগ করুন এবং কিছুক্ষণ ভাজুন।টমেটো, ক্যাপসিকাম, হলুদ গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, পাও ভাজি মশলা এবং লবণ যোগ করুন। টমেটো নরম হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।চূর্ণ করা আলু, মটরশুঁটি এবং ফুলকপি যোগ করুন। ভালোভাবে মিশিয়ে একটু জল যোগ করুন মিশ্রণটি ভালোভাবে রান্না করে নিন এবং সবজিগুলো ভালোভাবে মিশে গেলে মাখন যোগ করুন।ধনেপাতা দিয়ে পরিবেশন করুন এবং নামিয়ে নিন

2. **পাও প্রস্তুতি:**একটি প্যানে মাখন গরম করুন। পাওগুলো মাঝখানে কেটে নিন এবং প্যানে রেখে সোনালি রং হওয়া পর্যন্ত ভাজুন, ভাজি একটি বাটিতে নিন এবং উপরে মাখন যোগ করুন। লেবুর টুকরো এবং কুচানো পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করুন।

**ওমলেট রেসিপি**

ওমলেট হলো একটি সহজ এবং দ্রুত তৈরি করা যায় এমন খাবার যা সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে হালকা খাবার হিসেবে উপযুক্ত। এটি বিভিন্ন উপাদান দিয়ে প্রস্তুত করা যায়, যা আপনার স্বাদ অনুযায়ী রান্না করা যেতে পারে।

**ওমলেট রেসিপি**

উপকরণ:

  • ১ ডিম: ২টি
  • ২ লবণ: স্বাদমতো
  • ৩ পেঁয়াজ: ১টি, কুঁচি করে কাটা
  • ৪ কাঁচা মরিচ: ১টি, কুঁচি করে কাটা (ঐচ্ছিক)
  • ৫ টমেটো: ১টি, কুঁচি করে কাটা
  • ৬ ধনেপাতা: ১ টেবিল চামচ, কুঁচি করে কাটা
  • ৭ গোলমরিচ গুঁড়া: ১/৪ চা চামচ (ঐচ্ছিক)
  • ৮ তেল: ২ টেবিল চামচ

প্রণালী:

1. একটি বাটিতে ডিম ভেঙে নিন।

2. ডিমের সাথে লবণ, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, টমেটো এবং ধনেপাতা মিশিয়ে ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন।

3. একটি প্যানে তেল গরম করুন।

4. ফেটানো ডিম মিশ্রণটি প্যানে ঢেলে দিন এবং সমানভাবে ছড়িয়ে দিন।

5. মাঝারি আঁচে রান্না করুন, এবং এক পাশে সোনালী রং ধারণ করলে ওমলেটটি উল্টে দিন।

6. উভয় পাশ সোনালী হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।

7. ওমলেট তৈরি হয়ে গেলে এটি একটি প্লেটে তুলে গরম গরম পরিবেশন করুন।

ওমলেট সাধারণত ব্রেড, টোস্ট বা পারাথার সাথে পরিবেশন করা হয়। আপনি এটি আপনার পছন্দমতো সস বা কেচাপের সাথে পরিবেশন করতে পারেন।

চিড়া ও দই

চিড়া ও দই একটি পরিচিত ও সহজলভ্য খাবার যা আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। চিড়া, যা ফ্ল্যাটেনড রাইস নামেও পরিচিত, সাধারণত দুধ, দই বা জল দিয়ে খাওয়া হয়। দই যোগ করলে এই খাবারটি আরও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর হয়ে ওঠে। এটি একটি সস্তা ও সহজলভ্য খাবার যা প্রাতঃরাশ, দুপুরের খাবার বা নাস্তা হিসেবে খাওয়া যায়।এটি বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অঞ্চলে প্রচলিত একটি জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে গরমের সময় এই খাবারটি অনেকেই পছন্দ করেন।

চিড়া ও দই

উপকরণ:

  • ১চিড়া: ১ কাপ
  • ২ দই: ১ কাপ
  • ৩ চিনি বা মধু: স্বাদমতো
  • ৪ ফল (যেমন কলা, আম, আপেল): ইচ্ছানুযায়ী
  • ৫ বাদাম বা কিশমিশ: ইচ্ছানুযায়ী
  • ৬ লবণ: সামান্য (ইচ্ছা হলে)

প্রস্তুতি:

1. চিড়া প্রথমে ভালো করে ধুয়ে নিন।

2. অতিরিক্ত জল ঝরিয়ে চিড়া একটি বাটিতে নিন।

3. দই চিড়ার সাথে মিশিয়ে দিন।

4. চিনি বা মধু যোগ করে ভালোভাবে মেশান।

5. ফল, বাদাম বা কিশমিশ যোগ করুন, যা খাওয়ার সময় আরও স্বাদ বাড়াবে।

6. সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

পুষ্টিগুণ:

চিড়া ও দই এর মধ্যে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ রয়েছে। চিড়া কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস এবং দই প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এই খাবারটি হালকা, কিন্তু পুষ্টিকর। এটি বাড়িতে সহজেই তৈরি করা যায় এবং ব্যস্ত দিনের কোনো সময়েই উপভোগ করা যেতে পারে। তাই, আজই চিড়া ও দই প্রস্তুত করে দেখুন এবং আপনার পরিবারের সাথে এর স্বাদ উপভোগ করুন।

চিকেন রোল রেসিপি

চিকেন রোল হলো একটি সুস্বাদু এবং সহজে তৈরি করা যায় এমন খাবার, যা স্ন্যাকস হিসেবে খুব জনপ্রিয়। এটি বিশেষ করে পার্টি বা টিফিনে পরিবেশনের জন্য আদর্শ। নিচে চিকেন রোল তৈরির একটি সাধারণ রেসিপির কাঠামো দেওয়া হলো:

চিকেন রোল রেসিপি

উপকরণ:

চিকেন ফিলিংয়ের জন্য:

  • ১মুরগির মাংস (বনফিলেট বা কিউব করে কাটা): ২৫০ গ্রাম
  • ২ লবণ: স্বাদমতো
  • ৩ গোলমরিচ গুঁড়া: ১ চা চামচ
  • ৪ রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • ৫ আদা বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • ৬ কাঁচা মরিচ বাটা: ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)
  • ৭ পেঁয়াজ (মিহি করে কাটা): ১টি
  • ৮ টমেটো (মিহি করে কাটা): ১টি
  • ৯ ধনিয়া পাতা: ২ টেবিল চামচ (কাটা)
  • ১০ তেল: ২ টেবিল চামচ

রোল বানানোর জন্য:

  • ১ রুটি (পরিমাণ মতো, আপনি চান এমন ধরনের): ৮-১০টি
  • ২ মায়োনেজ: ৪ টেবিল চামচ
  • ৩ ক্যাচাপ: ২ টেবিল চামচ
  • ৪ শসা (লম্বা করে কাটা): ১টি
  • ৫ টমেটো (লম্বা করে কাটা): ১টি
  • ৬ লেটুস পাতা: ১০-১২টি
  • ৭ তেল: ভাজার জন্য

প্রণালী:

1. **চিকেন ফিলিং প্রস্তুত করা:**

   1. একটি প্যানে তেল গরম করুন।

   2. তাতে পেঁয়াজ ভেজে সোনালী করে নিন।

   3. পেঁয়াজ সোনালী হলে আদা ও রসুন বাটা যোগ করুন এবং কিছুক্ষণ ভাজুন।

   4. মুরগির মাংস যোগ করুন, লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া, এবং কাঁচা মরিচ বাটা যোগ করুন।

   5. মাংস ভালভাবে রান্না না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।

   6. টমেটো যোগ করুন এবং মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।

   7. রান্না শেষে ধনিয়া পাতা মিশিয়ে নিন।

2. **রুটি প্রস্তুত করা:**

   1. একটি প্যানে অল্প তেল গরম করুন।

   2. রুটি বা পরোটা ভেজে নিন, যতক্ষণ না সোনালী ও সাদা হওয়া পর্যন্ত।

3. **রোল বানানো:**

   1. একটি রুটির ওপর মায়োনেজ ও ক্যাচাপ মাখুন।

   2. তার ওপর লেটুস পাতা, শসা, টমেটো স্লাইস এবং চিকেন ফিলিং দিন।

   3. রুটির দুই প্রান্ত ভাঁজ করুন এবং রোল করে পরিবেশন করুন।

পরিবেশন: চিকেন রোলগুলো গরম গরম পরিবেশন করুন। এটি স্ন্যাকস, ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চ হিসেবে দারুণ মজা দেয়। 

টোস্ট:

টোস্ট একটি জনপ্রিয় ও সহজ খাবার যা সাধারণত সকালের নাস্তা হিসেবে খাওয়া হয়। এটি সাধারণত পাউরুটি গরম করে প্রস্তুত করা হয় এবং এর সাথে মাখন, জ্যাম, বা অন্যান্য টপিং ব্যবহার করা যায়

টোস্ট

উপকরণ:

টোস্ট তৈরি করতে ব্যবহৃত সাধারণ উপকরণগুলির তালিকা দিন, যেমন:

  • ১ পাউরুটি
  • ২ মাখন বা মার্জারিন
  • ৩ জ্যাম, জেলি, মধু, বা অন্য টপিংস (চাইলে)

প্রস্তুত প্রণালী:

1. প্রথমে পাউরুটির স্লাইস নিয়ে নিন।

2. টোস্টার বা প্যানে রুটি সোনালি ব্রাউন হওয়া পর্যন্ত গরম করুন।

3. গরম টোস্টে মাখন লাগান।

4. চাইলে এর উপর পছন্দের টপিং যেমন জ্যাম, জেলি, মধু ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন

পুষ্টিগুণ:

টোস্টের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রদান করুন। উদাহরণস্বরূপ, পাউরুটিতে কার্বোহাইড্রেট থাকে যা শক্তি প্রদান করে। এছাড়াও, মাখন বা মার্জারিন ব্যবহারের ফলে কিছু পরিমাণে ফ্যাট এবং ভিটামিন A পাওয়া যায়।

টিপস এবং ভেরিয়েশন: ভিন্ন স্বাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পাউরুটি (সাদা, বাদামী, মাল্টিগ্রেইন ইত্যাদি) ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের টপিংস যেমন পিনাট বাটার, চিজ, অ্যাভোকাডো বা ডিম ব্যবহার করে টোস্টের স্বাদে ভিন্নতা আনতে পারেন।টোস্ট একটি সহজ, দ্রুত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার যা সকালের নাস্তা হিসেবে আদর্শ। এটি তৈরি করা খুবই সহজ এবং বিভিন্ন ধরনের টপিংস ব্যবহার করে এর স্বাদে বৈচিত্র্য আনা যায়। আপনি চাইলে এটি একটি সুস্বাদু নাস্তা হিসেবে উপভোগ করতে পারে

**উপসংহার:**

নাস্তা কেবল একটি খাবার নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ। বিভিন্ন ধরনের নাস্তা তৈরির মাধ্যমে আমরা আমাদের খাবারের তালিকায় বৈচিত্র্য আনতে পারি এবং নতুন স্বাদ উপভোগ করতে পারি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *